শীত দরজায় কড়া নাড়ছে: এই সময় পাখির যত্নে আমাদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগী হতে হবে।
পাখির খাঁচা খোলামেলা রাখতে হবে” কাপড় কিংবা চটের বস্তা দিয়ে পাখির খাঁচা পুরোপুরি ঢেকে দেয়া যাবে না। যারা বারান্দায় পাখি পালন করেন” তারা বারান্দার গ্রিলে ত্রিপল দিয়ে ঢেকে দিতে পারেন। যাতে বাহিরের ঠান্ডা বাতাস” সরাসরি পাখির গায়ে না লাগে। যারা টিনের ঘরে পাখি পালন করেন” তারা টিনের চালের নিচে ফয়েল পেপার দিয়ে দিতে পারেন। এতে করে রুমের তাপমাত্রা বাহিরে তাপমাত্রা থেকে বেশি থাকবে।
সব সময় খেয়াল রাখতে হবে” পাখির দুইটা টেম্পারেচার সহনশীল” এভিয়ারি তে ২০ ডিগ্রির নিচে তাপমাত্রা নামতে দেয়া যাবে না এবং ২৮ ডিগ্রী উপরে উঠতে দেয়া যাবে না। তবে আপনারা যদি আপনাদের পাখিকে” তাপমাত্রার সাথে মানিয়ে নেওয়াতে পারে” সেক্ষেত্রে ২/৩ ডিগ্রি কম বেশী হলেও সমস্যা হবেনা আশা কোরি। তবে ২০ থেকে ২৮ ডিগ্রী টেম্পারেচারে ভেতরে পাখিকে রাখতে পারলে পাখি সবসময় নিরাপদ থাকবে।
রুমের তাপমাত্রা কন্ট্রোল করার জন্য হিটিং লাইট অথবা রুম হিটার ব্যবহার করতে পারেন। এগুলো ব্যবহার করার পূর্বে অবশ্যই ইলেকট্রিক্যাল শর্ট-সার্কিট যাতে না হয় সেই জিনিস গুলো খেয়াল রাখবেন।
শীতের সময় রুমের তাপমাত্রা কন্ট্রোল করার সময় আমরা যখন হিটিং লাইট অথবা হিটার ব্যবহার করি তখন আদ্রতা আনব্যালেন্স হয়ে যায়। তাই আদ্রতা দিকে খেয়াল রাখতে হবে। এভিয়ারি তে আদ্রতা ৫০% থেকে ৬০% এর ভিতর রাখতে হবে তবে ৫৫% রাখতে পারলে সবচেয়ে ভালো হয়।
পোষা পাখি শীতকালীন পরিচর্যা
- আদ্রতা এবং টেম্পারেচার চেক করার জন্য HTC মিটার ব্যবহার করতে পারেন।
- শীতের সময় পাখিকে প্রতিদিন তিনবার ফুটন্ত গরম পানি ঠান্ডা হলে কুসুম গরম অবস্থায় খেতে দিন।
- শীতের সময় পাখিকে সপ্তাহে একবার গোসল করাবেন।
- গোসল করানোর পরে অবশ্যই পাখিকে ১০ মিনিট হালকা রোদে রাখতে চেষ্টা করুন।
তীব্র শীতের সময় পাখির যত্ন
- শীতের সময় সিডমিক্স এর সাথে তেলজাতীয় সিডমিক্স এর পরিমাণটা বাড়িয়ে দিতে চেষ্টা করুন।
- সপ্তাহে দুই এগ ফুড খেতে দিন।
- মাল্টিভিটামিন পাঁচ থেকে সাত দিন খেতে দিন।
- বাসক পাতা আর তুলসী পাতা জ্বাল দিন।
- শীতের সময় মসলা চা খাওয়াতে পারেন সপ্তাহে দুই দিন
পাখির জন্য মশলা চা তৈরি করার নিয়ম:
তুলসী পাতা পাঁচ-ছয়টা, এক চিমটি গোলমরিচের গুড়ো, ১ ইঞ্চি পরিমাণ আদা কুচি, ৩/৪টা লং, এক চিমটি কালোজিরা, একটা বড় কালো এলাচ, ৮ থেকে ১০ মিনিট হালকা আঁচে জ্বাল দিয়ে নামিয়ে ঢেকে রাখুন ঠান্ডা হলে কুসুম গরম অবস্থায় খেতে দিন। চা ৫ থেকে ৬ ঘন্টা খাঁচাতে রাখুন।
সপ্তাহে একদিন বাসক পাতা আর তুলসী পাতা জ্বাল দিয়ে দিয়ে খাওয়াতে পারেন। সাত-আটটি বাসক পাতা আর তুলসী পাতা ৪/৫ টি হালকা আঁচে ১০ মিনিট জ্বাল দিয়ে ঢেকে রেখে ঠান্ডা হলে কুসুম গরম অবস্থা পাখিকে খেতে দিন। ৫ থেকে ৬ ঘন্টা পরে সরিয়ে ফেলুন।
তীব্র শৈত্যপ্রবাহ হলে কি করবেন?
যখন তীব্র শৈত্যপ্রবাহ থাকবে তখন: সপ্তাহে দুই দিন মধু আর কালোজিরা খাওয়াতে পারেন” ঠান্ডার তীব্রতা কম থাকলে সপ্তাহে একদিন খাওয়াবেন। এক চিমটি কালোজিরা এক লিটার পানিতে জ্বাল দিয়ে” ঢেকে রেখে ঠাণ্ডা হলে” যখন পানি কুসুম গরম অবস্থায় থাকবে” তখন এক চা চামচ খাঁটি মধু মিশিয়ে পাখিকে খেতে দিন। খাঁচাতে ৫ থেকে ৬ ঘণ্টার বেশি মধু মিশ্রিত পানি রাখা যাবেনা।
শীতের সময়: পাখিকে প্রতিমাসে ভালো মানের মাল্টিভিটামিন পাঁচ থেকে সাত দিন খেতে দেন। এতে করে পাখির শরীরের তাপমাত্রা বাড়তি থাকবে এবং পাখি পরিবেশের নিম্ন তাপমাত্রা কন্ট্রোল করতে পারবে।
ভালো থাকুক সবার ভালোবাসার পাখিগুলো” এটাই কামনা করি।
Good luck.