কি করলে জীবনে সুখী হবো এবং স্বাস্থ্যবান থাকবো? ২০ টি গুরত্বপূর্ণ টিপস

সবাই চায় সুস্বাস্থ্য ও সুখী জীবনের অধিকারী হতে। যার স্বাস্থ্য ভালো তার সব ভালো। স্বাস্থ্যের সাথে মনের একটা বড় সম্পর্ক রয়েছে। সুস্বাস্থ্যের অধিকারী মানুষ নিজের সুখের জন্যে পথ তৈরি করে নেবেন নিজে থেকেই। অপরদিকে একজন অসুস্থ্য মানুষ চাইলেও মনকে সুখ দিতে পারে না। সবাই শুধু জানতে চায়, কি করলে জীবনে সুখী হবো এবং স্বাস্থ্যবান থাকবো? এ কারণেই সুস্বাস্থ্য এবং সুখী জীবণযাপন করতে সবাইকেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। নিজেকে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী করে তোলার জন্য অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। কিছু কাজও করতে হবে নিজেকে মা্নসিকভাবে সুখি করার জন্য। সেসব অভ্যাস ও কাজগুলো আসুন জেনে নেয়া যাক।

সুস্বাস্থ্যের জন্য ১০ পরামর্শ

  • প্রতিদিন অন্তত ১০ মিনিট হাটুন।
  • সিড়ি বেয়ে উঠুন লিফটের বদলে।
  • প্রতিদিন কমপক্ষে ১০ মিনিট অন্ধকার স্থানে চুপচাপ বসে থাকুন।
  • ৬-৮ ঘন্টা নিয়মিত এবং নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমানোর চেষ্টা করুন। বেশি রাত জাগবেন না।
  • প্রতিদিন মাত্র ১৫ মিনিট সময় বের করে ব্যায়াম করার চেষ্টা করুন
  • মাসে অন্তত একবার দু’দিনের ছুটি নিয়ে ঘুরে আসুন পছন্দের কোনো স্থানে।
  • শরীরকে কষ্ট দিয়ে কোনো কাজ করবেন না। আপনার যতটুকু ক্ষমতা ঠিক ততটাই কাজ করুন।
  • প্রতিদিন ৬-৮ গ্লাস পানি পান করুন। পানির অপর নাম জীবণ।
  • সময়মতো এবং পরিমাণমতো খাওয়া দাওয়া করুন। প্রবাদ রয়েছে, ‘সকালের নাস্তা রাজার মতো, দুপুরের খাবার রাজপুত্রের মতো এবং রাতের খাবার ভিখিরির মতো করা উচিত’। এই প্রবাদ মেনে চলুন।
  • খাদ্য তালিকায় বেশি রাখুন শাকসবজি, ফলমূল। শুধুমাত্র প্রয়োজন অনুযায়ী মাছ, মাংস খান।

সুখী জীবনের জন্য ১০ টি টিপস

  • প্রাণ খুলে হাসুন। সবাইকে মিষ্টি হাসি উপহার দিন।
  • নিজের সঙ্গে অন্য কারো তুলনা করতে যাবেন না। আপনি আপনার স্থানে সম্পূর্ণ ভিন্ন একজন মানুষ।
  • নেতিবাচক সব ধরণের চিন্তা ঝেড়ে ফেলুন। যারা নেতিবাচক চিন্তা করে তাদের জীবনে ইতিবাচক ঘটনা খুব কমই ঘটে।
  • আয় বুঝে ব্যয় করুন।নিজের সীমার বাইরে যাবেন না কখনো। একবার সীমার বাইরে চলে গেলে জীবনটাই অগোছালো হয়ে যেতে পারে।
  • একদম সময় নষ্ট করবেন না।কাজ করুন যতোটুকু সময় পান। বাকি সময় নিজের জন্য এবং নিজের পরিবারের জন্য রাখুন। জীবনে উন্নতি এবং সুখ পাবেন।
  • হিংসা, লোভ-লালসা, রাগ, ঈর্ষা- এ ধরণের আবেগগুলো নিজের থেকে দূরে রাখুন। নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ রাখু্ন যতটা সম্ভব।
  • অতীত থেকে শিক্ষা নিন। শিক্ষাটুকু কাজে লাগান আর অতীত ভুলে যান।অতীতে কি করতে পারতেন আর কি করতে পারতেন না তা এখন চিন্তা করে কোনোই লাভ নেই। এটি শুধুই বর্তমানকে নষ্ট করে।
  • মানুষকে ভালোবাসুন। জীবনটা অনেক ছোট। এখানে অন্য একজনকে ঘৃণা করে কাটানোর মতো সময় একদমই নেই।
  • ক্ষমা করে দিতে শিখুন। এতে মনের শান্তি ফিরে পাবেন।
  • সবসময় ন্যায়ের পক্ষে কথা বলুন। আদর্শে জীবন চলে না কিন্তু আপনি আদর্শ অনুসরণ না করলে জীবনে শান্তি পাবেন না। মনে সুখ আসবে না।

সুখী ও স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনে ৯টি অভ্যাস

ওজনটাকে বাগে আনতে অনেকে না খেয়ে থাকেন। এর মাধ্যমে সুস্থ সবল থাকার চেষ্টা আসলে বৃথা। কারণ না খেয়ে থাকলে আপনি ক্ষুধার্ত থাকবেন এবং সুখ নষ্ট হবে। গবেষণায় দেখা গেছে যারা খাবার না খেয়ে বা নিয়ন্ত্রণ করে সুস্থ থাকার চেষ্টা করেছেন, তাদের ৯৫ শতাংশ বিফল হয়েছেন। তাই সুস্থ-সবল-সুখী জীবনের জন্য কি করা যায়?

নিউ ইয়র্কের ইউএস হাইবুশ ব্লুবেরি কাউন্সিল এর নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত হয় ব্লুবেরি হেলথ রিসার্চ এন্ড কিলিনারি লাঞ্চিওন। এরা স্বাস্থ্যকর ও সুখী জীবনযাপনের জন্য খাবার, শরীরচর্চা এবং মজা করার বিষয়ে ৯টি অভ্যাস গড়ে তোলার পরামর্শ দিয়েছেন।

পরামর্শগুলো দেখা যাকঃ

পছন্দের খাবার খানঃ খাবারের প্লেটটিকে নানা বর্ণের খাবারে ভরে তুলুন। সেখান থেকে অবশ্যই আপনার প্রিয় খাবারকে ফেলে দিবেন না। তবে খাদ্য গ্রহণের বিষয়ে সংযম ধরে রাখবেন। পহন্দের খাবার বাদ দিলে আপনার তৃপ্তি আসবে না এবং আপনার ক্ষুধা থেকেই যাবে।

বাড়িতে স্বাস্থ্যকর খাবার রাখুনঃ বাড়ির রেফ্রিজারেটরে ভালো মানের খাবার রাখুন। টেবিলে এক ব্যাগ চিপস না রেখে এক গামলা ফল রাখুন। বাজারের তালিকায় ভালো ও পুষ্টিকর খাবারের নাম লিখুন।

নিজেই বানিয়ে ফেলুনঃ ছুটির দিনে এক দুই ঘন্টা সময় করে লাঞ্চ রেঁধে ফেলুন। প্রতিদিন কাজে যাওয়ার সময়ও খুব দ্রুত স্ন্যাক্স এর ব্যবস্থা করতে পারেন নিজেই। একটু কষ্ট করে এ অভ্যাসটি গড়ে তুলতে পারলে আপনি গোটা সপ্তাহ অনেক সুস্থ সবল থাকতে পারবেন এবং দিনের শেষে নানা হতাশায় আচ্ছন্ন হবেন না।

কাজের শেষে ব্রেকঃ যদি আপনার টানা ৩/৪ ঘন্টা কাজ করতে সমস্যা হয়, তাহলে নিয়মিত ব্রেক নিয়ে নিতে পারেন। নির্দিষ্ট সময় পরপর একটু হেঁটে আসলেন বা কিছু খেয়ে নিলেন ইত্যাদি।এতে কাজের মধ্যে মানসিক অশান্তি জুড়ে আসবে না।

ব্যায়াম করুনঃ শরীর চর্চা মূলত পেশীবহুল শরীর তৈরির জন্যেই নয়। এর দ্বারা দৈহিক ও মানসিক চাপ দূর হয়। ব্যায়ামের পর বাজে মানসিকতা মুহূর্তেই দেখবেন দূর হয়ে গেছে। তাছাড়া স্ট্রেস কমানোর জন্য প্রকৃতির মাঝে চলে যেতে পারেন। এ জন্য কোনো পার্কে হেঁটে আসা ভালো কাজ হবে।

কর্মঠ হোনঃ কাজ না থাকলেও যে কিছু করতে হবে না এমনটা নয়। মূলত যেকোন কাজ করার মানসিকতা থাকতে হবে। আমাদের প্রতিদিন একঘন্টা ব্যায়াম করার প্রয়োজন হলেও আমরা গড়ে ১৭ মিনিট ব্যায়ামের কাজ করি। হাঁটুন, সাইকেল চালান বা যাই করুন তা যেন দৈহিক পরিশ্রমের কাজ হয়।

সপ্তাহের অন্তত এক ঘন্টা মনের মত কাজঃ ছুটির দিন হোক বা অন্য যেকোন দিন, অন্তত এক ঘন্টা আপনার মনের মত কাজ করুন। হতে পারে তা সিনেমা দেখতে যাওয়া বা সমুদ্র সৈকতে গিয়ে রোদ পোহানো ইত্যাদি। মনের মত এ কাজ আপনাকে দেবে অনাবিল আনন্দ আর মানসিক শক্তি।

নিজের কাজের তালিকাঃ এটি অবশ্যই পাশাগত কাজের তালিকা নয়, এটি একান্ত নিজের কাজের তালিকা। মোবাইলে বা ক্যালেন্ডারে কাজের বিষয় লিখে নির্দিষ্ট দিনের ঘরে দাগ দিয়ে রাখতে পারেন। সে অনিযায়ী একান্ত নিজের কাজ করুন।

থামুন এবং রিচার্জ হয়ে নিনঃ গতানুগতিক কাজ করতে করতে ঝিমিয়ে পড়লে থেমে যান এবং নিজেকে রিচার্জ করে নিন। নিজের ভালো লাগে এমন কাজে অর্থ ব্যয় করুন। বাড়িতে পরিবারের সঙ্গে বেশি সময় দিন। কম্পিউটার, মোবাইল, টেলিভিশনে বেশি সময় দেয়া বাদ দিন। বাচ্চাদের সঙ্গে খেলুন, বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিন। দেখবেন কত দ্রুত আপনার মানসিক এবং দৈহিক অবস্থা ভালো হয়ে যাবে।

একবার আপনি কিছু লোক বা ঘটনা সম্পর্কে সচেতন হয়ে গেলে যা আপনার শক্তিকে ধ্বংস করে, আপনার পরবর্তী পদক্ষেপগুলি বিবেচনা করুন। একবারে সবকিছু মোকাবেলা করার পরিবর্তে, আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ এমন একটি ক্ষেত্র বেছে নিন এবং আপনার সেট করা লক্ষ্যগুলির সাথে বাস্তববাদী হন। উদাহরণস্বরূপ, যদি আপনার বাড়িতে অব্যবস্থাপনা প্রতিদিনের চাপের একটি বড় উত্স হয়, তাহলে প্রতি সপ্তাহে একটি ক্যাবিনেট, পায়খানা বা ড্রয়ার পরিষ্কার করার জন্য বেছে নিন এবং এটি একবারে করার জন্য নিজেকে অভিভূত করার পরিবর্তে। তারপর যখন আপনি প্রস্তুত বোধ করবেন তখন আপনার পরবর্তী লক্ষ্যে যান।

এবং মনে রাখবেন:

আপনাকে সবকিছু করতে হবে না, এবং আপনাকে একবারে এটি করতে হবে না। আপনি আসলেই উপভোগ করেন এমন জিনিসগুলি করার সম্ভাবনা বেশি। সুতরাং, এই স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের টিপসগুলির মধ্যে কোনটি আপনার কাছে সবচেয়ে উপভোগ্য মনে হয় তা নোট করুন এবং সেখানে শুরু করুন!

Leave a Comment